ফিলিস্তিন | আল-নাকবা

Comments · 463 Views

১৪ মে ১৯৪৮। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখল করে ইহুদিদের জন্য নতুন একটি রাষ্ট্রের। আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু...............

১৪ মে ১৯৪৮। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখল করে ইহুদিদের জন্য নতুন একটি রাষ্ট্রের। আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তায় গঠিত নতুন রাষ্ট্রটির নাম রাখা হয় ইজরাইল। ইহুদিদের মতে নতুন রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমিতে ফিরে এসেছে, এই ভূমি শুধুই তাদের। প্রতিশ্রুত ভূমি, মনোনীত সম্প্রদায় ভূমিহীন মানুষের জন্য মনুষ্যহীন ভূমি ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জোর পূর্বক আধুনিক ইসরাইলকে বৈধতা দেয়ার জন্য এই বাক্যগুলি মুখস্থের মত দিনের পর দিন আওড়ে যান পশ্চিমা দুনিয়ার দ্বিমুখী নীতি নির্ধারকরা "আমি গতকাল বলেছি যে আমার দেয়া প্রতিশ্রুতি ইসরাইল ও ইহুদীদের কাছে কখনো বদলাবেনা ইসরাইলের পাশে আছি আর আমরা এখন একসাথে কাজ করে যাবো আমি ইসরাইলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি অপেক্ষা করিয়ে রাখার জন্য এর পর-

গল্পটা শুধু ইসরাইলের এগিয়ে যাওয়ার আর ফিলিস্তিনের উপর বিপর্যয়ের। শুরু হয় ইজরায়েল রাষ্ট্রের পথযাত্রা আর ফিলিস্তিনিদের পশ্চাৎ যাত্রা। দিনের পর দিন বাড়তে থাকে ইহুদি বসতি আর বাস্তহারা হতে থাকে ভূমি মালিক ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্থানীয় আরব অধিবাসীদের উপর নেমে আসে মহা বিপর্যয় বা আল- নাকবা। ইহুদি সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সেনারা ফিলিস্তিনিদের ঘর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য হত্যা ধর্ষণ লুট অগ্নিসংযোগ শুরু করে প্রাণ ভয়ে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাড়ি-ঘর সহায় সম্পত্তি ছেড়ে পালাতে থাকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি জর্ডান, লেবানন ও সিরিয়া গিয়ে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় নেয়। গাজা উপত্যকায় সমুদ্র ও আকাশপথে অবরোধ করে রাখে ইসরায়েল এই উপত্যকার সঙ্গে ইসরাইল ও মিশরের সীমান্ত রয়েছে।

গাজার আয়তন মাত্র ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটার। যা দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনের সমান।  আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও এই উপত্যকা বেশ জনবহুল। দিনে দিনে জনসংখ্যা বাড়লেও ইসরাইলি দখলদারিত্বে ছোট হচ্ছে গাজার আয়তন। এজন্য গাঁজাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার বলেন অনেকে। গাজার মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ এখন উদ্বাস্তু নিজেদের বাড়ি, পরিবার, উপার্জন এমনকি দেশ হারিয়ে তাদের বসবাস করতে হচ্ছে বিভিন্ন দেশের শরণার্থী শিবিরে বাঁচতে হচ্ছে অন্যের দয়ার উপর। ১৯৯৮ সালে ইজরায়েল যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ঘটা করে উদযাপনের প্রস্তুতি নেয় তখন ফিলিস্তিনিদের কিংবদন্তী নেতা ও ফিলিস্তিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত সিদ্ধান্ত নেন যে তারাও তাদের নাম্বার পঞ্চাশ বছর পূর্তি পালন করবেন তিনি।

ইসরায়েলের স্বাধীনতা দিবস এর পরের দিনটিকে নাকবা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন ৭৫ বছর আগে শুরু সেই দখলদার ইসরাইল নামক বীজ আজ বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনিদের ওপর অনিঃশেষ এই বিপর্যয় চলছেই। আরবিতে বিপর্যয় কে বলা হয় নাকবা ফিলিস্তিনিরা প্রতিবছর তাই ১৫ মে তারিখটিকে আল-নাকবা দিবস হিসেবে পালন করে চলমান সংঘাত যেন পুরনো সেই দুঃসহ স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে দখলদার ইসরাইলিরা বারবার হুমকি দিচ্ছে আরেকটা নাকবার আর ফিলিস্তিনিরা ছুটে চলছে অনিশ্চিত জীবনের পথে...

Comments